Lost history of Khejuri হারানো ইতিহাসের খোঁজে খেজুরিতে

แชร์
ฝัง
  • เผยแพร่เมื่อ 28 ก.ย. 2024
  • ১৮৩০ সালের ১৯ শে নভেম্বর রাজা রামমোহন রায় পুর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি বন্দরে এসে রাত্রি যাপন করেছিলেন। পরদিন প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এই খেজুরি বন্দরের অনেক অজানা ইতিহাস আছে যা আজও ইতিহাসের পাতায় উল্লিখিত নেই।
    প্রাচীন গ্রীক এবং চিনা পরিব্রাজকের বর্ণনায় এই বাংলার বিশ্ব বিখ্যাত সমুদ্র বন্দর তাম্রলিপ্তের বর্ণনা পাওয়া যায়। সম্রাট অশোক এই বন্দর থেকেই সিংহলে অর্থাৎ বর্তমানের শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়েছিলেন বুদ্ধগয়ার অশ্বত্থ গাছের চারা বা শাখা। কিন্তু অষ্টম শতকের পর থেকেই প্রাকৃতিক কারণে সমুদ্রের পিছিয়ে যাওয়ার ফলে এই তাম্রলিপ্ত বন্দরের পতন শুরু হয়। গঙ্গা ও তার উপনদীর পলি পড়ে এই বন্দরের নাব্যতা কমে যাওয়ায় পরবর্তী বন্দর হিসেবে তাম্রলিপ্ত থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত খেজুরি বন্দরের নাম উঠে আসে। সেই সময় এইসব অঞ্চলে গঙ্গার অনেক ব-দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল খেজুরি এবং হিজলি।
    পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি সাবডিভিশানের অন্তর্গত হুগলি নদীর তীরে একটি গ্রাম খেজুরি। তবে এটি যে কোনও সাধারণ গ্রাম নয় তা অনেকেরই অজানা, ইতিহাসের পাতায় এর নাম নেই; আমাদের তথাকথিত ইতিহাসের কোথাও কখনও উল্লিখিত হয়নি ভারতে সর্বসাধারণের জন্য ডাক ব্যবস্থা এই খেজুরি গ্রাম থেকে প্রথম চালু হয়েছিল। ফরাসি, পর্তুগীজ, ওলন্দাজ এবং ইংরেজরা এসেছিল এই খেজুরিতে; এখানে তাদের বসবাসের নিদর্শন আজও বিদ্যমান।
    ইংরেজরা কলকাতায় পণ্য পরিবহনের জন্য এখানে তৈরী করেছিল বন্দর ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে, কিন্তু খেজুরিতে তারা ডাক ব্যবস্থার সূচনা করে তারও আগে। ভারতের প্রথম পোস্ট অফিস ইংরেজরা এখানে তৈরী করেন যেমন নিজেদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তেমনি, সাধারণ মানুষও তা ব্যবহার করতে পারতো। এখানেই সৃষ্টি হয় ভারতের প্রথম টেলিগ্রাফ ব্যবস্থারও। সুতরাং এই খেজুরি পোস্ট অফিসটি যে ভারতের ইতিহাসের এক অন্যতম অঙ্গ তা বলাই বাহুল্য। কালের নিয়মে এই পোস্টঅফিসটি ধ্বংস হয়ে যায় ঝড়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যায় ১৮৬৪ নাগাদ। পরবর্তীকালে এর মূল বাড়িটি না থাকলেও, এর একটি ভগ্নপ্রায় অংশ ও প্রবেশদ্বার আজও বিদ্যমান। বাংলার ২০০ বছরের গেজেটে একমাত্র উল্লেখ আছে এই খেজুরি পোস্ট অফিসের।
    বর্তমানে স্থানীয় মানুষজন ও বন দপ্তরের উদ্যোগে সেটিকে রক্ষণাবেক্ষনের মাধ্যমে খুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে দ্রষ্টব্য স্থান হিসেবে।
    হুগলী নদীর তীরে জঙ্গলের ভিতর এই পোস্ট অফিসটির একটিমাত্র অংশ উল্লম্বভাবে দুর্গের মতন দাঁড়িয়ে আছে আজও সুদূর ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। পুরানো ভাঙা ইঁটের গায়ে গজিয়েছে আগাছা। ইঁটের ভাঙা ফটক পেরিয়ে ঢুকতে হবে মূল খন্ডে। ভিতরে ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠা যায়, চলে যাওয়া যায় এর ছাদে, কিন্তু ঐটুকুই এর বাকি অংশ আর নেই, হারিয়ে গেছে কালের গর্ভে।
    বর্তমানে খেজুরি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি শ্রী সুমন বাখরা এবং খেজুরি কলেজের প্রধান অধ্যক্ষ শ্রী অসীম মান্না ও স্থানীয় কিছু মানুষের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে এর রক্ষণাবেক্ষনের কাজ, কিন্তু সরকারি হস্তক্ষেপের অভাব রয়ে গেছে আজও। সদ্য হেরিটেজ তকমা জুটলেও ভারতের প্রথম এই পোস্ট অফিসের প্রয়োজন সঠিক রক্ষণাবেক্ষনের তাই খেজুরির স্থানীয় মানুষজন চায় সরকার যেন এই উদ্যোগ নেন এবং ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে থাকুক রানারের ইতিহাস, শুধু ঝড় জল নয়, একসময় খেজুরির এই জঙ্গলে খবর বিলি করতে গিয়ে বাঘের পেটে যেতে হয়েছিল অনেক রানারকেই।
    কলকাতা থেকে খেজুরির দুরত্ব ১২৪ কিলমিটার।ট্রেন অথবা লঞ্চ পেড়িয়েও আসা যায় তবে গাড়ি নিয়ে যাওয়াই সুবিধা।গাড়ি নিয়ে এলে কলকাতা থেকে কোলাঘাট হয়ে নন্দকুমার মোড় পেড়িয়ে কাঁথি রোডে দীঘা যাওয়ার পথে বাঁ হাতে পড়বে খেজুরি।

ความคิดเห็น •