মহালয়ার ইতিহাস। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। BIRENDRA KRISHNA VADRA HISTORY l #shortvideos
“ কায়েতের ছেলে হয়ে চণ্ডীপাঠ করবে! এ কেমন কথা..? ”💫🌻🗓️ সালটা ১৯৩১ 🗓️
পঙ্কজ মল্লিকের জোরের কাছে হার মেনেছিলেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র
মহালয়ার ভোরে আকাশবাণী থেকে সরাসরি চণ্ডীপাঠ করবেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র,
কায়েতের ছেলে হয়ে চণ্ডীপাঠ করবে! এ কেমন কথা? এতো কানে শোনাও পাপ। সমাজ কী বলবে? লোকে যে ছিঃ ছিঃ করবে, মহালয়ার ভোরে আকাশবাণী থেকে সরাসরি চণ্ডীপাঠ করবেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র। মুখ কাঁচুমাচু করে, হাত কচলে তিনি আবেদন নিবেদন জানিয়েছিলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিকের কাছে। কিন্তু পঙ্কজবাবু নাছোড়। তাঁর একটিই কথা,
মহালয়ার সূর্য উঠবে বীরেন্দ্র কৃষ্ণের চন্ডিপাঠ শুনতে শুনতে। সম্প্রচারিত হবে ‘ মহিষাসুরমর্দিনী ’।সঙ্গে থাকতছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, উৎপলা সেন, ইলা বসু, পঙ্কজ মল্লিক, সুপ্রীতি ঘোষের গানে।
🗓️ সাল ১৯৩১ 🗓️
পঙ্কজ মল্লিকের জোরের কাছে হার মেনে মহালয়ার আগের দিন রাতে সমস্ত শিল্পী আকাশবাণীতে। ব্রহ্ম মুহূর্তে মা দুর্গাকে স্মরণ করে পাঠ শুরু করলেন বীরেন্দ্রবাবু। পাঠ করতে করতে তিনি আস্তে আস্তে ডুবে যেতে লাগলেন মন্ত্রের মধ্যে। তাঁর পাঠের সঙ্গে চলছে সমস্ত শিল্পীদের কালজয়ী সব গান ---
“ জাগো তুমি জাগো ”,
“ বাজলো তোমার আলোর বেণু ”,
“ জাগো দুর্গা, জাগো দশপ্রহরণধারিণী ”...🌸
পাঠ যত এগোচ্ছে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ যেন বাহ্যজ্ঞান রহিত। একেবারে শেষ পর্বে এসে মাকে ডাকতে ডাকতে তিনি আত্মভোলা । চোখ দিয়ে, গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে শরতের শিশিরের মতো পবিত্র অশ্রুকণা। বাকিরা বাকহারা হয়ে শুনছেন সেই পাঠ। সেই সম্প্রচারণ সেযুগে আকাশে বাতাসে তখন গমগম করছে একটাই ডাক, “ আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর; ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা; প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা..”💛🌿
পরের দিন সবার মুখে একটাই প্রশ্ন, অমন হৃদয় নিংড়ানো চণ্ডীপাঠ করলেন কে? কেউ ভুলেও জানতে চাননি, যিনি পাঠ করলেন তিনি ব্রাহ্মণ সন্তান না কায়েতের ছেলে!
৯১ বছর আগে জিতে গিয়েছিল পঙ্কজ মল্লিকের জেদ। তাঁর আশীর্বাদে কালজয়ী হয়েছিল বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র-বাণী কুমার-পঙ্কজ মল্লিকের 'মহিষাসুরমর্দিনী'। মহালয়ার ভোর হয়েছিল কায়েতের ছেলের চণ্ডীপাঠে।
সেই শুরু। তারপর ৯১ বছর ধরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। বদলেছে বাঙালির জীবন। পছন্দ, ভালোলাগা মন্দলাগা। কিন্তু আজও এই একটি বিষয়ে বাঙালি ভীষণ প্রাচীনপন্থী।
১৯০৫ সালে -সরলাবালা দেবীর কোলে জন্মেছিলেন যে বীরেন, কে জানত একসময় তিনিই হয়ে উঠবেন মহালয়ার বঙ্গ জীবনের অঙ্গ..! 💛
#shortvideos
#