কুতুবশাহ মসজিদ অস্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থাপনা।
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে হাওরের জন্য বিখ্যাত হলেও সেখানে আছে ঐতিহাসিক নানা স্থান। তার মধ্যে অন্যতম কুতুবশাহী মসজিদ।
২০২০ সালের ৪ আগস্ট মসজিদটিকে সংস্কারও করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
ঐতিহাসিক স্থাপনাটিকে ময়মনসিংহ সহ ওই এলাকার সবচেয়ে পুরোনো স্থাপনা হিসেবে ধরা হয়। এর নির্মাণশৈলীতে রয়েছে সুলতানি ও মোঘল আমলের ছাপ।
দুই সময়ের নির্মাণশৈলী ও কোনো নির্মাণফলক না থাকায় মসজিদটি নির্মাণের সময় নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ মসজিদটি ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছে বলে মনে করেন।
অন্যদের দাবি, এটি সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে নির্মিত হয়েছে বলেই মসজিদটিতে সুলতানি ও মোগল স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
প্রক্ষাত সূফী সাধক, পীর হযরত শাহ কুতুব ইয়ামিনীর (র.) মাজার রয়েছে মসজিদটির পাশে। তার নামেই এ মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে। তার নির্দেশে অনুসারীরাই মসজিদটি নির্মাণ করেন।
কারুকার্যখচিত আয়তকার মসজিদটির বাইরের দেয়ালে আছে পোড়ামাটির চিত্রফলক, প্যানেলে আছে কারুকাজ। মসজিদের ছাদে পাঁচটি গম্বুজের মধ্যে মাঝেরটি বড়। বাকি চারটি একটু ছোট। এর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে দুটি করে চারটি এবং পূর্ব পাশে তিনটি প্রবেশপথ রয়েছে। এগুলো সুলতানি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ।
এ ছাড়া মসজিদের পূর্ব পাশের প্রবেশপথের বিপরীতে তিনটি মেহরাব রয়েছে। মসজিদের ঠিক পশ্চিম পাশে রয়েছে হযরত কুতুবশাহ (র:) পবিত্র মাজার। মসজিদের দক্ষিণ পাশে রয়েছে আরও পাঁচটি কবর। এগুলো কুতুবশাহের সফরসঙ্গীদের বলে কথিত আছে। মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে ২০ জন খাদেমের কবরও রয়েছে।
মসজিদ ও মাজারের একজন খাদেম মাওলানা আবদুস সামাদ শাহ ফকির ‘আমরা আমাদের দাদাদের মুখ থেকে শুনেছি, ইংরেজ শাসনামলেও এই মসজিদে একটি শিলালিপি ছিল। পরে ইংরেজরা সেই শিলালিপিটি গায়েব করে ফেলে। ফলে এর সঠিক ইতিহাস কেউ বলতে পারে না।’
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ১৯০৯ সালে সরকার ঐতিহাসিক এই মসজিদটিকে সংরক্ষিত পূরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।
তিনি আরও জানান, প্রতিবছরের মাঘ মাসের শেষ শুক্রবারে এখানে ওরস শরিফ পালন করেন তারা। এ ছাড়া বুধবারে মাজারে কোরআন খতম এবং মাজারে গিলাফ ছড়ানো হয়। বৃহস্পতিবার হয় ওয়াজ মাহফিল।
আবদুস সামাদ বলেন, ‘প্রতিবছরই এ অনুষ্ঠানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ এখানে জড়ো হন। অনেকে এখানে এসে মানত করে যান। মনের বাসনা পূরণ হলে মসজিদে এসে মানত পূরণ করেন। পুরো উপজেলার বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধি এই মসজিদ জিয়ারতের মাধ্যমে তাদের নির্বাচনি প্রচার শুরু করেন।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট কুতুবশাহী মসজিদটি বাংলার সুলতানি ও মোগল স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যে নির্মিত।
বিখ্যাত দরবেশ হযরত কুতুব শাহের নামানুসারে আয়তকার মসজিদটির উত্তর-দক্ষিণ দিকে দৈর্ঘ্য ৪৬ ফুট ১১ ইঞ্চি এবং পূর্ব-পশ্চিমে ২৭ ফুট ১১ ইঞ্চি। বাংলার চৌচালা ঘরের চেয়ে এর কার্নিশগুলো বেশি ঢালু। মসজিদের চার পাশে আট কোণ বিশিষ্ট চারটি মিনার রয়েছে।
**ANTI-PIRACY WARNING **
This content's Copyright is reserved for Mohakal. Any unauthorized reproduction, redistribution or re-upload is strictly prohibited of this material. Legal action will be taken against those who violate the copyright of the following material presented!
This song is property of Mohakal.
©Mohakal
#কুতুবশাহী
#কুতুবশাহীমসজিদ
#QutubShahi